Sobujbangla.com | যাত্রী হয়রানির অভিযোগে ওসমানী বিমানবন্দরের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।
News Head
 বদলাবে প্রশ্নপত্রের ধরন, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা ১২ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগের কেউই রেহাই পাবে না:চিফ প্রসিকিউটর। তুরস্কের সাথে বৈঠক করলেন এনসিপির নেতারা। জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইইউ। বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত। শাপলা’ প্রতীকের দাবিতে অনড় দলটি, ইসির চিঠির জবাব দেবে এনসিপি, বাংলাদেশিদের ভিসা সহজ করতে অনুরোধ আমিরাতে কর্মসংস্থান। ধর্মের ভিত্তিতে জাতির বিভাজন দেখতে চায় না জামায়াতে ইসলামী। জনগণের অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন।

যাত্রী হয়রানির অভিযোগে ওসমানী বিমানবন্দরের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।

  |  ২১:০২, জুলাই ৩১, ২০২১

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক জামিলা চৌধুরীকে হয়রানির অভিযোগে দুই কর্মকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। তাদের একজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও আরেক জনকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে শাস্তির আওতায় আনা দুই কর্মকতার নাম প্রকাশ করতে অনীহা প্রকাশ করা হয়নি। শনিবার ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিমানের স্টেশন ব্যবস্থাপক চৌধুরী ওমর হায়াত বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৮ জুলাই ওই নারীর সঙ্গে সৃষ্ট ঘটনার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বাসায় গিয়ে শান্তনা দিয়ে বলেছি, আগামী ৪ আগস্ট যে ফ্লাইট আছে, সেই ফ্লাইটে যেতে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এছাড়া ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলইন্স কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। রোববার তদন্ত করতে আসবেন বিমানের জিএম পদবির এক কর্মকর্তা। গত ২৮ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের (বিজি-২০১) সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা ছিল জামিলা চৌধুরীর। ফ্লাইট ধরতে তিনি ওইদিন দুপুর সোয়া ১টায় বিমানবন্দরে হাজির হন। চেকইনকালে তিনটি লাগেজে তার মালামাল ৮৪ কেজি ওজন হয়। নির্ধারিত ওজনের চেয়ে ৪৪ কেজি বাড়তি হওয়ায় ফি আসে এক লাখ ১৪ হাজার ৮৮৪ টাকা। এ নিয়ে বিমান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় জামিলার। তারা তাকে অপমান করেছেন, নিজের ফেসবুক লাইভে এ দাবি করেন ওই নারী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিন ঘণ্টা আগে বিমানবন্দর পৌঁছানোর পরও কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে তাকে রেখেই প্লেন ছেড়ে চলে যায়। ফেসবুক লাইভে জামিলা চৌধুরী বলেন, ‘বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে দেশে এসেছিলেন তিনি। ফেরার পথে চেকইনকালে তিনটি লাগেজে নির্ধারিত ওজনের চেয়ে অতিরিক্ত মালামাল হয়ে যায়। এজন্য তার কাছে ২৬ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ করেন ওই কর্তব্যরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তার লাগেজ ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাকে অপমান করে বলা হয়, তুমি একটা পাগল মেয়ে। ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে নিজের ভোগান্তির কথা জানিয়ে জামিলা চৌধুরী বলেন, চেকিংয়ের নামে বিমান বাংলাদেশ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। ২৬ হাজার টাকা না দেওয়াতে তারা তাকে এমন হয়রানি করে ফ্লাইট মিস করান। তারা তার ইমোশনটাকে নিয়ে খেলা করছেন। যখন তিনি বলেছেন, ‘আমি ডিপ্রেশনের ট্যাবলেট খাই। ’ তখন বলছে, তুমিতো একটা পাগল মেয়ে। ওরা মিথ্যে অপবাদ দিয়ে পাসপোর্ট ছুড়ে ফেলে। ফ্লাইটের ডেট লাইন সম্পর্কেও কেউ তাকে অবহিত করেনি। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে সন্তানদের রেখে আমার অসুস্থ বাবাকে দেখতে আসি। মা-বাবা চলে গেলে এই বাংলার মাটিতে আসবো না। আমাকে ওরা লাঞ্ছিত করেছেন। আমি এত লাঞ্ছিত হইছি, শুধু জায়নামাজে বসে আল্লাহকে বলেছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ বিমানের কাউন্টারে পৌঁছালেও দায়িত্বরত কর্মকর্তা জামিলা চৌধুরীর কাছে লোকেটর ফরম চান। তখন নিজ মোবাইলে লোকেটর ফরমটি দেখালেও প্রিন্ট কপি চান এক কর্মকর্তা। বারকোডযুক্ত লোকেটর ফরমে প্রিন্ট কপি বাধ্যতামূলক হতে পারে না। এনিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় তার। যেহেতু এখন সবকিছুই ডিজিটালি চলছে। কিন্তু বিমানের ওই কর্মকর্তা তা মানেননি। কিছুক্ষণ বাক-বিতণ্ডার পর লোকেটর ফরম প্রিন্ট করার জন্য যান। কিন্তু সেখানে দীর্ঘ লাইন থাকায় তা প্রিন্ট করাতে পারেননি তিনি। এখানে দুই দফায় বেশ খানিকটা সময় চলে যায় তার। এরপর তার লাগেজে অতিরিক্ত মালামালের জন্য কর্মকর্তা ‘অনৈতিকভাবে’ টাকা দাবির অভিযোগ করেন জামিলা চৌধুরী। তিনি অপারগতা জানালে অতিরিক্ত ওজনের লাগেজ ফিরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র একটি লাগেজ নিয়ে বোর্ডিং পাস দেওয়ার জন্য আকুতি জানান। ততক্ষণে কাউন্টার বন্ধ করে কর্মকর্তারা চলে যান। উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ জানালে কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। এরপর নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিও চিত্র ধারণ করেন তিনি। ওই সময় বিমানের কর্মকর্তারা এবং এভিয়েশনের সিকিউরিটি ইনচার্জ কেউই তাকে বাধা দেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই নারীকে যেকোনো ভাবে সাহায্য করা যেতো। বিমান কর্মকর্তারা চাইলে তা করতে পারতেন। কিন্তু তার সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেননি। ওইদিন বিমান কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ও শিশির ডিউটি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ব্রিটিশ বাংলাদেশী ওই নারী কর্মকতা জাকির হোসেন সুমন নামে বিমানের চেক-ইন সুপারভাইজারের ছবি দেখান। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। চার দলীয় জোট সকারের সময় নিয়োগ পাওয়া সুমন ১৮ বছর বিমানে চাকরি করছেন। গত দুই বছর ধরে তিনি ওসমানী বিমানবন্দরে কর্মরত। এর আগে গত ২২ জুলাই আরেক ব্রিটিশ বাংলাদেশী নাগরিককে এভাবে হয়রানি করা হয়। ওইদিন নিজের মোবাইল ফোনে থেকে ভিডিও চিত্র ধারণ করলেও তাকে কেউ বাধা দেননি। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এই বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপক চৌধুরী ওমর হায়াত বলেন, করোনার জন্য লোকেটরের হার্ড কপি যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। কারণ মোবাইল ফোন অনেক সময় মিসিং হয়ে গেলে যাত্রীকেই বিপত্তিতে পড়তে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ