Sobujbangla.com | ধুলায় ধূসর প্রকৃতিকন্যা জাফলং।
News Head
 বদলাবে প্রশ্নপত্রের ধরন, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা ১২ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগের কেউই রেহাই পাবে না:চিফ প্রসিকিউটর। তুরস্কের সাথে বৈঠক করলেন এনসিপির নেতারা। জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইইউ। বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত। শাপলা’ প্রতীকের দাবিতে অনড় দলটি, ইসির চিঠির জবাব দেবে এনসিপি, বাংলাদেশিদের ভিসা সহজ করতে অনুরোধ আমিরাতে কর্মসংস্থান। ধর্মের ভিত্তিতে জাতির বিভাজন দেখতে চায় না জামায়াতে ইসলামী। জনগণের অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন।

ধুলায় ধূসর প্রকৃতিকন্যা জাফলং।

  |  ২১:০৮, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১

প্রকৃতি কন্যা হিসাবে সারাদেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং। খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। সীমান্তের ওপারে ইনডিয়ান পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরামধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রীজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল পানি,উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও শুনশান নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুণ ভাবে মোহাবিষ্ট করে। এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিনই দেশী-বিদেশীপর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। প্রকৃতি কন্যা ছাড়াও জাফলং বিউটি স্পট, পিকনিক স্পট, সৌন্দর্যের রাণী- এসব নামেও পর্যটকদের কাছে ব্যাপক পরিচিত। ভ্রমনপিয়াসীদের কাছে জাফলং এর আকর্ষণই যেন আলাদা। সিলেট ভ্রমনে এসে জাফলং না গেলে ভ্রমনই যেন অপূর্ণ থেকে যায়। সেই জাফলং এখন সারি সারি কারখানায় পাথর ভাঙার বিকট শব্দ। পাথর ভাঙার ধুলায় বাতাস ভারী। ভাঙাচোরা সড়কে কেবলই ধুলার রাজত্ব। নদীতে চলছে বালু আর অপরিকল্পিত ভাবে পাথর তোলার উৎসব। পাথর ও বালু ব্যবসায়ীদের এসব কর্মকাণ্ডে জাফলংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখন প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় পৌঁছেছে। ভাঙাচোরা ও ধুলাবালির সড়কে দিনের বেলাতেও খুব সাবধানে চলতে হয় চালকদের। সব মিলিয়ে পর্যটকদের বিমুখ করতে যতগুলো উপাদান দরকার, জাফলংয়ে তার সব কটিই বেশি মাত্রায় আছে। সড়কের ভোগান্তি এবং বালু ও পাথর ব্যবসায়ীদের যন্ত্রণায় এই ভরা মৌসুমেও জাফলংয়ে পর্যটকরা হতাশ। জাফলংয়ের মূল পর্যটন কেন্দ্রের প্রায় এক-দেড় কিলোমিটার আগে মামারবাজার। সেখান থেকে সড়কের পাশে একের পর এক পাথর ভাঙার যন্ত্র বসিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। জাফলং জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি পর্যন্ত প্রায় ৪০-৫০টি যন্ত্রে বিরামহীন ভাবে চলছে পাথর ভাঙার কাজ। কান ফাটানো শব্দ আর ধুলাবালি মিশে পুরো পরিবেশ একাকার। ফলে জাফলংয়ের মূল আকর্ষণ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সবুজ পাহাড় পরিষ্কার দেখাই যায় না। জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টের কাছে ছয়জন তরুণ পর্যটক জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান নামের এক তরুণ বললেন, ‘অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল জাফলংয়ে আসব। কিন্তু এসে খুবই হতাশ হলাম। মনে হচ্ছে পর্যটকদের জন্য এখানে কিছু নাই। সবই পাথর ব্যবসায়ীরা দখল করে রেখেছেন। ধুলাবালিতে মাখামাখি হয়ে গেছি।’ তাঁর কথায় সায় দিলেন সঙ্গের পাঁচজন। জাফলংয়ের প্রতি পর্যটকেরা প্রায় বিমুখ। জাফলং সাব জোনের ইন্সপেক্টর রতন শেখ জানান, একজন বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চাই, পাথরের ডাস্ট (পাথরের ধুলা) নিঃশ্বাসে এবং চোঁখে গেলে কি ক্ষতি হতে পারে। মারাত্মক পরিবেশ দূষণে জাফলং, পাথরের ধুলায় সয়লাব জাফলং। শব্দ দূষণে বধির হওয়াসহ পাথরের ডাস্ট, নিঃস্বাসে গেলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, কিডনিজনিত সমস্যা এবং বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা বিদ্যমান। এই ধুলো চোখে গেলে মারাত্মক ক্ষতির সম্ভবনা সহ স্থায়ী অন্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। ক্রাশার মিলের মালিক ও ব্যবসায়ীরা পানি মারার কথা থাকলেও তারা পানি দিচ্ছে না, যার ফলে বাতাসের সাথে উড়ে উড়ে আসছে পাথর ভাঙ্গার ডাষ্ট। দুষিত হচ্ছে পরিবেশ, বিমুখ হচ্ছেন পর্যটকরা, অস্বস্তিতে আছে সাধারণ মানুষ। বিষয়টা নিয়ে তিনি তার নিজস্ব ফেসবুক একাউন্টে একটা লাইভও দিয়েছেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ