ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় ৮০ হাজার নগরবাসী।

সিলেটে করোনাভাইরাসের টিকা পেতে মানুষের অপেক্ষা বাড়ছেই। টিকা কার্যক্রমের শুরুতে টিকা নেয়ার মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে তা বেড়েছে কয়েকগুণ। গণটিকা, নিয়মিত টিকা দিয়েও অপেক্ষমাণ মানুষের সংখ্যা কমানো যাচ্ছে না। সর্বশেষ শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ নিবন্ধন করে টিকা নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে এসব মানুষের অপেক্ষা খুব দ্রুতই ফুরানো সম্ভাবনা কম। কারণ আগামী ২৫ তারিখের আগে পুরোদমে আবারও টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার খুব বেশি সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের কর্মকর্তারা। এদিকে, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নগরে আরও টিকা কেন্দ্র বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রথমবার ১১ টি নতুন কেন্দ্রের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করলেও কোন সাড়া মেলেনি। তবে দুদিন আগে আবারও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ আবারও ৭টি কেন্দ্রের অনুমোদন চেয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে জটিলতা বাড়ছে বিদেশগামী যাত্রীদের টিকা নিয়েও। প্রথমে বিদেশযাত্রীদের জন্য মডার্না টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সর্বশেষ বুধবার তাও বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করা সিলেটের ২৭৬২ জনকে কোন টিকা দেয়া হবে তাও সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে জানানো হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। আর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাছে কোন নির্দেশনা না থাকায় তারাও বলতে পারছেন না এখনও বিদেশযাত্রীদের কোন টিকা দেয়া হবে বা কিভাবে দেয়া হবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা গত বুধবার আবারও ৭ কেন্দ্রে অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। এই কেন্দ্রগুলো অনুমোদন হলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়। কারণ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যদি প্রথম ডোজ এবং দ্বিতীয় ডোজ একসাথে দেই তাহলে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের ভিড় জমবে। এতে স্বাস্থ্যবিধি পালন করাটা কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া ওসমানীর টিকা কেন্দ্রের বুথগুলো পঞ্চম তলায়। সেখানে ওঠার জন্য দুটি লিফট থাকলেও একটি ভালো আরেকটি মাঝেমধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। আর মানুষও যতক্ষণ পর্যন্ত ওভারলোডের সতর্ক সংকেত না বাজে ততক্ষণ পর্যন্ত লিফটে উঠতেই থাকে। এতে লিফটেও স্বাস্থ্যবিধি থাকে না। এছাড়া ওসমানীতে সকাল ৯টা থেকে ১২টার মধ্যেই প্রায় ২ হাজার মানুষ টিকা নিয়ে নেয়। অথচ ১২টার পর থেকে ভিড় কমে আসে। কারণ মানুষ মনে করে সকাল গেলেই মনে হয় সুবিধা। সেজন্য সবাই সকাল থেকেই টিকা কেন্দ্রে ভিড় জমায়। এতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আমাদের বেগ পোহাতে হয়। তিনি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমাদের কাছে একটা চিঠি এসেছে, চিঠিতে বলা হয়েছে মডার্না কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। বিদেশযাত্রীদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত এটা জানতে চেয়ে আমি আবার চিঠি দিয়েছি। কারণ ‘আমি প্রবাসী’ এর মাধ্যমে ২৭৬২ জন পাসপোর্ট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা জানতে চিঠি দিয়েছি।’ বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, সিলেটে প্রথম ডোজ কবে থেকে শুরু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আজকে সন্ধ্যায় মিটিং আছে- এখানে হয়তো কোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আমরা আশা করছি আগামী ২৫ তারিখ থেকে আবার প্রথম ডোজ দেয়া শুরু করতে পারবো।