Sobujbangla.com | পরিবহণ শ্রমিকদের কাছে ‘জিম্মি’ সিলেটবাসী।
News Head
 বদলাবে প্রশ্নপত্রের ধরন, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা ১২ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগের কেউই রেহাই পাবে না:চিফ প্রসিকিউটর। তুরস্কের সাথে বৈঠক করলেন এনসিপির নেতারা। জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইইউ। বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত। শাপলা’ প্রতীকের দাবিতে অনড় দলটি, ইসির চিঠির জবাব দেবে এনসিপি, বাংলাদেশিদের ভিসা সহজ করতে অনুরোধ আমিরাতে কর্মসংস্থান। ধর্মের ভিত্তিতে জাতির বিভাজন দেখতে চায় না জামায়াতে ইসলামী। জনগণের অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন।

পরিবহণ শ্রমিকদের কাছে ‘জিম্মি’ সিলেটবাসী।

  |  ২০:১৮, ডিসেম্বর ২৩, ২০২০

সিএনজি অটোরিক্সায় গ্রীল লাগানো যাবেনা এবং সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার অযৌক্তিক দাবীতে সিলেটে টানা ধর্মঘট পালন করছে পরিবহন শ্রমিকরা। আর চলমান এ পরিবহণ ধর্মঘটকে অযৌক্তিক দাবি করে সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, চলমান এ ধর্মঘটে শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টি সিন্ডিকেট আন্দোলন। একই সাথে আন্দোলনের মাধ্যমে আদালত অবমাননা করা হচ্ছে। আর এই সিন্ডিকেটের কাছে কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েছেন সিলেটবাসী।
তবে বাস মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, বাস মালিক সমিতি ধর্মঘটে নেই। শুধুমাত্র শ্রমিক সংকট থাকায় বাসগুলো চলাচল করতে পারছে না।
আর পণ্যপরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাথর কোয়ারি খুলে না দেয়ার ফলে শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। কাজ নেই, বাসে যাত্রী নেই। এজন্য তারা গণপরিবহণকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মঘট করছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার বলেন, পাথর উত্তোলনের দাবি কিংবা কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবি যেটাই হোক না কেন সেই দাবির সমর্থনে বা দাবি নিয়ে যদি আন্দোলন করে এবং পাথর শ্রমিকদের দোহাই দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট করে তা অযৌক্তিক। কারণ সব পরিবহণ পাথর রিলেটেড না আবার পরিবহণের একমাত্র পণ্য তো পাথর না। আর সিলেটের যেসব পাথর কোয়ারি নিয়ে আদালতে রিট আছে বা রায় আছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে আদালতের রায় না মানার কারণে আদালত অবমাননারও আদেশ আছে। সব মিলিয়ে এই বিষয়ে ধর্মঘট করা বা ধর্মঘটে সমর্থন করা আদালতের রায়ের পরিপন্থী একটি কার্যক্রম। এটি আদালত অবমাননা। আর এই কার্যক্রমের সাথে যারা জড়িত বা যারা সমর্থক বা বন্ধ করার দায়িত্ব থেকেও যারা বন্ধ করছেন না তারা সকলেই আদালত অবমাননা করছেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরিবহণ নেতারা বর্তমানে শমিকদের কথা বললেও বিগত বছরগুলোতে পাথর কোয়ারিতে যেসব শ্রমিক মারা গেছেন কোনো শ্রমিককে কি তারা আর্থিক সহযোগিতা করেছে? যদি তারা সহযোগিতা না করে তাহলে হঠাৎ তারা শ্রমিক দরদি হলো কিভাবে? আর পরিবহণ ধর্মঘট ডেকে এসব নেতারা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশকে লঙ্ঘন করছেন। আমরা আশা করবো, মহামান্য হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদালত অবমাননার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম চলমান পরিবহণ ধর্মঘটকে ‘সিন্ডিকেট’ আন্দোলন হিসেবে অবিহিত করে বলেন, পাথরখেকোদের কালো টাকার কাছে শ্রমিক নেতারা বিক্রি হয়ে এই ধরণের আন্দোলন করছেন। এটি কালো টাকার ক্ষমতা হিসেবেও দেখতে হবে।
সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার বলেন, আমাদের নির্ধারিত আন্দোলন চলবে। কারণ আমরা সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে নড়ছি না। আর জেলা প্রশাসক আমাদেরকে উনার সীমাবদ্ধতার জায়গা দেখিয়েছেন। সেজন্য আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার অপেক্ষায় আছি। আমরা চাইছি প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে কোনো নির্দেশনা দিন। এজন্য আমরা পরিবহন ধমর্ঘটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নজরে বিষয়টি দিতে চাইছি। কোয়ারিতে যখন মানুষ যায় তখন কিন্তু সবাই গাড়িতে যায়। আর এই যাত্রীদের কেন্দ্র করেই কিন্তু আমরা গাড়ি কিনেছি। কিন্তু কোয়ারি বন্ধ থাকায় বর্তমানে যাত্রী নেই। সেজন্য তাদেরকে যুক্ত করা হয়েছে। সিএনজি অটোরিকশার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
যাত্রীর সাথে কোয়ারির সম্পর্ক কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোয়ারি চালু হলে বাসগুলোতে ৭০ শতাংশ যাত্রী বাড়বে। কারণ শ্রমিকরা বিভিন্ন এলাকা থেকে পাথর কোয়ারিতে যান। পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার মতো পরিবেশ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দাবি হলো আমরা কাজ করবো, ভাত খাবো। এর বাইরে আর কোনো দাবি আমাদের নেই।
তবে সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, বাস মালিক সমিতি পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে নেই। শ্রমিক সংকট থাকায় আমরা বাস চালাতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। চলবে ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। ধর্মঘটে সিলেট বিভাগের তিন জেলায় বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, কোচ, লেগুনা, ট্যাংকলরি, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব গণপরিবহনের চলাচল বন্ধ থাকার কথা জানানো হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্স, বিদেশগামী যাত্রী, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্র ও জরুরি ওষুধ সরবরাহের গাড়ি ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ