অটুট বন্ধন রয়েছে ভারত-বাংলাদেশের: মোদী
উদ্বোধন করা হয়েছে ভারতের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ খ্যাত ‘বাংলাদেশ ভবন’। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টার পর পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশের অর্থায়নে নবনির্মিত এই ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুদেশের মধ্যকার অমীমাংসিত বিষয়গুলো বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এর আগে, শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে নরেন্দ্র মোদী ও মমতার সঙ্গে অংশ নেন শেখ হাসিনাও। সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতায় মোদি বলেন, বাংলাদেশ ভারত আলাদা দুটি দেশ হলেও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অটুট বন্ধন রয়েছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টা। কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতন।
অবশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাশে নিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন করেন বহুল প্রতীক্ষিত বাংলাদেশ ভবন। কেননা, দু’দেশের মৈত্রীর সম্পর্কের অন্যতম স্মারক খ্যাত এই ভবন ভারতের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ।
এরপর নবনির্মিত ভবনের সুসজ্জিত অডিটোরিয়ামে বাংলাদশ ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন দুই শীর্ষ নেতাসহ অতিথিরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে আপনারা দেখবেন এই ছিটমহল নিয়ে যুদ্ধ লেগে আছে। কিন্তু ভারত এবং বাংলাদেশ একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভাতৃত্ববোধ নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে আমরা ছিটমহল বিনিময় করেছি। আমি আবেগে এতে আপ্লুত হয়েছিলাম যে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। মনে হলো ৭১ সালে যেভাবে আমরা ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলাম, আরও একবার দেখলাম ঠিকই আমাদের প্রতিবেশী বড় বন্ধু হয়ে তারা পাশে দাঁড়ালেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ হলে সমস্যা থাকতে পারে, কিন্তু আমরা একে একে সমস্যাগুলোর সমাধান করেছি। হয়তো কিছু বাকি আছে, আমি সেই কথাগুলো বলে এই চমৎকার অনুষ্ঠান নষ্ট করতে চাই না। কিন্তু আমি আশা করি যে কোনো সমস্যার সমাধান আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমেই সমাধান করতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন- দুই বাংলার সম্পর্ক চিরায়ত ও বিশ্বজনীন।
‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক চিরকাল ছিলো, আছে, থাকবে। আমি মনে করি এই বাংলাদেশ ভবনটি তীর্থস্থান হয়ে যাবে আগামী দিনে। বিশ্ববাংলার একটি বড় প্রাণকেন্দ্র হয়ে যাবে। কারণ বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের যে নিবিঢ় সম্পর্ক সেটি সুদৃঢ় করতে শান্তিনিকেতন যে কাজ করেছে, আমি তাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।’
এর আগে, বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতায় শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে রীতিমাফিক দুই নেতাকে ঐতিহাসিক শান্তিনিকেতনের মাটিতে স্বাগত জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় সমাবর্তন মঞ্চে একে একে আসন গ্রহণ করেন মমতা ব্যানার্জীসহ উপমহাদেশের প্রভাবশালী তিন শীর্ষ নেতা।
সমাবর্তনের বক্তব্যে অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী উল্লেখ করেন দুই বাংলার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিক নিয়ে। তিনি বলেন, দুটি আলাদা দেশ হলেও বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক অনেক দিক থেকেই অটুট।
বিকেলে অন্যান্য আয়োজনের ফাঁকে হাসিনা-মোদী শীর্ষ দুই নেতার আনুষ্ঠানিক বৈঠক করার কথা রয়েছে।